অনুপ্রেরণা (Inspiration)

আজ ইন্টার পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে । অভ্র পেয়েছে 3.50 ।অভ্র তার প্রিয় বিষয় বায়োলজিতেও কম পেয়েছে।তার অনেক স্বপ্ন সে মেডিকেলে পড়াশোনা করবে। কিন্তু তার যে অবস্থা সে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় দিতে পারবে না। কিন্তু অভ্রের বান্ধবী লীলা জিপিএ 5 পেয়েছে। অভ্র বুঝতে পারছিল না সে তার বান্ধবীকে কিভাবে মুখ দেখাবে ।সমাজ‌‌ও তাকে তিরস্কার করবে। অভ্র এসব ভাবতে ভাবতে কুদ্দুস স্যারের রুমে গেল। কলেজের শিক্ষক কুদ্দুস স্যার  কিছুতেই  অভ্রের রেজাল্ট মেনে নিতে পারলোনা। সে অভ্রকে প্রচণ্ড তিরস্কার করল এবং তার রেজাল্ট শীট বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল।কুদ্দুস স্যার অভ্রকে প্রচন্ড অপমান করলেন এবং সে অভ্রকে কান ধরে রেজাল্ট শীট নিয়ে বেরিয়ে যেতে বললেন। অভ্রের অবস্থা দেখে তার বন্ধুরা যথেষ্ট হাসাহাসি করলো। হাসাহাসির এক পর্যায়ে কুদ্দুস স্যার সবাইকে ধমক দিয়ে বলল এটা কি হাসির রাজ্য বসেছে নাকি? স্যার অকারণে অভ্রকে কষে এক থাপ্পর মারলেন। এই ঘটনা অভ্রকে  প্রচন্ড নাড়া দিল। তার জীবনের প্রতি মায়া ধরতে গেলে উঠে গেল । অপমানিত লজ্জিত ও ব্যথিত হৃদয়ে অভ্র করিডোর  ধরে বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ওর সাথে লীলার দেখা হল। লীলা অত্যন্ত উঁচু গলায় চেঁচিয়ে অভ্রের কাছে তার রেজাল্ট জানতে চাইল। অভ্র মাথা নিচু করে অত্যন্ত লজ্জিত ভঙ্গিতে তার রেজাল্টের দুর্দশার কথা লীলাকে বলল।তার এই খারাপ রেজাল্ট শুনে অত্যন্ত অহংকারী গলায় লীলা বলল তোমার লজ্জা করে না রেজাল্ট খারাপ করো, যাও আর কখনো আমার সামনে আসবে না। একথা শুনে অভ্রের মাথা প্রচন্ড হ্যাং হয়ে গেল। প্রচন্ড লজ্জায় চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেলল অভ্র। অভ্র ঠিক করলো সে আর কোনদিন বাড়ি ফিরে যাবে না। সে ভাবল বাসায় তার বাবা আছে, বাবা কিছুতেই এই ধরনের ফালতু রেজাল্ট মেনে নেবে না।কুদ্দুস স্যার তার বাবার কাছে নিতান্তই দুগ্ধপোষ্য শিশু । এসব ভাবতে ভাবতে অভ্র রুপসা ব্রিজের দিকে যাবার সিদ্ধান্ত নিল। এই জীবন আর সে রাখতে চাইনা। অভ্র ঠিক করলো আজ রাতেই পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করবে।

Post a Comment

0 Comments