স্বপ্নের পদ্মা সেতু

বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে পুরো বিশ্ব এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। দেশের উন্নয়নের কাজ এই মহামারীর কারণে কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। পদ্মা সেতু অন্যতম একটি মেগা প্রকল্প বাংলাদেশে।পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের 21 জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত পালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এই পদ্মাসেতু দ্বীতল এবং এই দ্বীতল পদ্মা সেতুর উপর সম্পূর্ণ আলাদা রেলসেতু নির্মাণের মাধ্যমে পূরণ হতে চলেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আরেকটি স্বপ্ন। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের যশোর পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ এর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রেল পথটি সম্পন্ন হলে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত দূরত্ব হবে মাত্র 166 কিলোমিটার। দক্ষিণ এশিয়ার আন্তঃদেশীয় রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। ট্রান্স এশিয়ান রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে এই রেল পথ ।বর্তমানে রেলপথের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে ঢাকায় আসতে বঙ্গবন্ধু সেতু পাড়ি দিয়ে 100 কিলোমিটার অতিরিক্ত পথের ভোগান্তি পোহাতে হয়।এ রেল পথটি চালু হলে মানুষের দূরত্ব ও সময় অনেক কমবে । মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় ঢাকা থেকে যশোর যাওয়া সম্ভব হবে এ রেলপথ চালু হলে। পূরণ হবে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।

প্রকল্প পরিচিতি:

প্রস্তাবিত রেললাইনটি ঢাকার কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে মাওয়া -ভাঙ্গা -কাশিয়ানী -নড়াইল হয়ে যশোর রেলওয়ে জংশনে যুক্ত হওয়ার কথা। নতুন রেললাইনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।প্রথম অংশটি হল ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত 81 কিলোমিটার এবং ভাঙ্গা থেকে কাশিয়ানী -নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত 85 কিলোমিটার। এ প্রকল্পে পাশাপাশি দুটি রেললাইন স্থাপনের সুযোগ সুবিধা রাখা হবে। তবে প্রথম পর্যায়ে নির্মিত হবে একটি মাত্র রেললাইন।এর মধ্যে প্রকল্প 1 এর আওতায় রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থেকে বুড়িগঙ্গা নদীর উপর দিয়ে মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হবে 82 দশমিক 32 কিলোমিটার।এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত 44 দশমিক 32 কিলোমিটার ,সেতুর ওপর 6.15 কিলোমিটার ও সেতু থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত 31 দশমিক 85 কিলোমিটার হবে।মোট 82 দশমিক 32 কিলোমিটার রেললাইন ও 27 কিলোমিটার লুপ লাইন ছাড়াও এ সেকশনে 125 টি রেলসেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ক্লিয়ারেন্স এর জন্য গেন্ডারিয়ার পর 16.77 কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড রেলপথ এবং 2.02 কিলোমিটার দীর্ঘ রাম্প নির্মাণ করার কথা রয়েছে।এছাড়াও 23.368 কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে পদ্মার দুই পার মিলিয়ে। ঢাকা বিভাগের ছয় জেলায় বিদ্যমান স্টেশন ছাড়াও স্থাপন করা হবে নতুন 6টি রেলস্টেশন ।এগুলো হলো শ্রীনগর, কেরানীগঞ্জ ,নিমতলা,মাওয়া,জাজিরা ও শিবচর।পাঁচটি রেলক্রসিং সহ 40 টি পয়েন্টে আন্ডারপাস সহ তিনটি ফ্লাইওভার থাকবে জাতীয় মহাসড়কে ।এ প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে 2022 সালের মধ্যে।


Post a Comment

0 Comments